ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সম্ভাবনা দেখাচ্ছে স্পেস ট্যুরিজম 

মো. তাজুল ইসলাম 
সম্ভাবনা দেখাচ্ছে স্পেস ট্যুরিজম 

অবসরে ঘুরতে যেতে আমরা কে না পছন্দ করি! কেউ বান্দরবান, কেউ সাজেক, আবার কেউ কক্সবাজার ঘুরতে যাচ্ছে, কেউ যাচ্ছে বিদেশে। কারও পছন্দ পাহাড়, আবার কারও পছন্দ সমুদ্র। ব্যস্ত জীবন থেকে সময় বের করে রুটিনের বাইরে পাহাড় বা সমুদ্রের সান্নিধ্যে সময় কাটাতে কে না চাইবে! কিন্তু ঘুরতে যাওয়া যদি হয় মহাশূন্যে? মানুষের অজানাকে জানার ইচ্ছা সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে। আর সেই অজানাকে জানার ইচ্ছা থেকে প্রথম সফল মানব হিসেবে ১৯৬১ সালের ১২ এপ্রিল ভস্টক-১-এ চড়ে সফলভাবে মহাকাশ ভ্রমণ করে ইতিহাস সৃষ্টি করেন সোভিয়েত বৈমানিক ও নভোচারী ইউরি গ্যাগারিন। এর আগে ১৯৫৭ সালের ৩ নভেম্বর সোভিয়েত নভোযান স্পুটনিক ২-এ চড়ে পৃথিবীর প্রথম জীব হিসেবে মহাকাশ ভ্রমণ করেছিল লাইকা নামের একটি কুকুর। রাশিয়ার এত সফলতায় মাঝে মহাকাশ গবেষণায় আমেরিকা পিছিয়ে থাকবে, তা কী হয়? তাই ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে অ্যাপেলো-১১ তে চড়ে চন্দ্র বিজয় করেন নিল আর্মস্ট্রং, মাইকেল কলিন্স ও বুজ অলড্রিন। মহাকাশ ভ্রমণ, চন্দ্র বিজয়, এসব মূলত মহাকাশ গবেষণাকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হয়েছিল। সাধারণ মানুষের জন্য এ সুযোগ নেই। তবে খুব শিগগির সাধারণ মানুষও পাবে মহাকাশ ভ্রমণের সুযোগ। রিচার্ড ব্রানসনের ভার্জিন গ্যালাকটিক, বেজোসের ব্লু অরিজিন, ইলন মাস্কের স্পেস এক্স মহাকাশ ভ্রমণকে সহজলভ্য করার জন্য স্পেস ট্যুরিজমের দিকে বিশেষ নজর দিয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় পরীক্ষামূলক ফ্লাইট হিসেবে ব্রিটিশ ব্যবসায়ী রিচার্ড ব্র্যানসনকে নিয়ে তার কোম্পানি ভার্জিন গ্যালাকটিক ইউনিটি-২২ নামের একটি যান মহাকাশে ভ্রমণের পর নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে এসেছে। আরেক ধনকুবের অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা বেজোস তার সংস্থা ব্লু অরিজিনের নিউ শেপার্ড নামের রকেটে করে মহাশূন্য ঘুরে নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসেন। আর স্পেস এক্স কাজ করছে মঙ্গলে বসতি স্থাপন নিয়ে। পরিবেশদূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন ও সম্ভাব্য পরমাণুযুদ্ধের ভয়াবহতার কারণে মানবসভ্যতা হুমকির মুখে। তাই মঙ্গল গ্রহ হতে পারে মানুষের নতুন আবাস। মঙ্গলে বসতি স্থাপনের লক্ষ্য সামনে রেখে কাজ করছে ইলন মাস্কের স্পেস এক্স। মানুষ যেমন এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভ্রমণ করে, অদূর ভবিষ্যতে মানুষ এক গ্রহ থেকে অন্য গ্রহ ভ্রমণে যাবে। তখন হয়তো মঙ্গলে বাড়ি থাকাটা আকাশ-কুসুম কল্পনা হবে না। ভ্রমণের ক্ষেত্রে কত খরচ পড়বে, সেটাও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর সেটি যখন মহাকাশে তাহলে, তো আর কথাই নেই। আগামী বছরের মধ্যেই বাণিজ্যিকভাবে মহাকাশে ফ্লাইট চালুর প্রত্যাশা করছে ভার্জিন গ্যালাকটিক। তার জন্য মহাকাশ সফরে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের জন্য আসনপ্রতি ৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩ কোটি ৮২ লাখ ৪১ হাজার টাকা করে টিকিট বিক্রি শুরু করেছে ভার্জিন গ্যালাক্টিক। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায়, এই ভ্রমণ শুধু ধনীদের উপভোগের জন্য। খুব শিগগির স্পেস ট্যুরিজম একটি লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হবে। বিশ্বের সেরা ধনকুবের এই সেক্টরে বিনিয়োগ তাই প্রমাণ করছে। সেদিন আর বেশি দূরে নয়, মহাকাশ ভ্রমণের সেলফিতে ভরে যাবে সোশ্যাল মিডিয়া বা নিয়মিত রুটিনের বাইরে নিজেকে সময় দিতে অবকাশ যাপনে মানুষ ঘুরে আসবে তার মঙ্গল গ্রহের বাড়িতে।

* শিক্ষার্থী

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া 

[email protected]

আলোকিত বাংলাদেশ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত